গোসলের বিবরণ- গোসল কত প্রকার ও কি কি?

আমরা এখানে গোসল এর বিবরণ এবং গোসল কত প্রকার ও কি কি বিস্তারিত জানবো ইনশাআল্লাহ। গোসল চার প্রকারঃ ১. ফরয গোসল, ২. ওয়াজিব গোসল, ৩. সুন্নত গোসল, ৪. মুস্তাহাব গোসল।

গোসল ফরয হওয়ার কারণ কি?

আমাদের সকলে গোসল ফরয হওয়ার কারণ কি তা জানা অত্যন্ত জরুরী। গোসল ফরয হওয়ার কারণগুলো হলোঃ ১. যৌন উত্তেজনাবশতঃ বীর্য বের হলে, ২. স্বপ্নদোষ হলে, ৩. স্ত্রী সহবাস করলে, ৪. পুরুষের লিঙ্গের অগ্রভাগ স্ত্রীর লিঙ্গে প্রবেশ করলে (বীর্যপাত হোক বা না-ই হোক), ৫. মেয়েদের হায়য বা নিফাস হলে, ৬. সমকাম কিংবা হস্ত মৈথুন করে বীর্যপাত ঘটালে।

গোসল ওয়াজিব হওয়ার কারণ কি?

গোসলের ফরয জানার পাশাপাশি গোসল ওয়াজিব হওয়ার কারণ কি তা জানা জরুরী। এখানে গোসল ওয়াজিব হওয়ার কারণগুলো দেওয়া হলোঃ ১. নাপাক অবস্থায় বেদ্বীন মুসলমান হলে, ২. স্বপ্নদোষ দ্বারা ছেলে বালেগ হলে, ৩. হায়য বা স্বপ্নদোষ দ্বারা মেয়ে বালেগ হলে।

সুন্নাত গোসল কি?

এ পর্যায়ে আমরা জানবো সুন্নাত গোসল কি। সুন্নাত গোসল হলোঃ জুমু'আর নামাযের জন্য গোসল করা, ২. দুই ঈদের নামাযের জন্য গোসল করা, ৩. হাজীদের জন্য আরাফাতের দিন দুপুরের পর গোসল করা, ৪. ইহরামের জন্য গোসল করা।

মুস্তাহাব গোসল কি?

আমরা অনেকেই মুস্তাহাব গোসল কি তা জানি না। এমনকি অনেকেই আছি যারা এখনো মুস্তাহাব গোসলের নামই শুনিনি। এখানে মুস্তাহাব গেসলের কারণগুলো দেওয়া হলোঃ ১. পাক অবস্থায় বে-দ্বীন মুসলমান হলে, ২. শবে বরাত, ৩. শবে-ক্বদর, ৪. সূর্য গ্রহণ বা ইস্তিস্‌ক্বার নামাযের পূর্বে, ৫. বেঁহুশ, মাতাল, পাগল ভাল হলে, ৬. মক্কা ও মদীনা শরীফে প্রবেশ করার জন্য, ৭. জিলহজ্ব মাসের নয় তারিখ দিবাগত রাত্রে মুয্‌দালিফায় অবস্থানের জন্য, ৮. তাওয়াফে যিয়ারত করার জন্য, ৯. শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ করার পূর্বে, ১০. গুনাহ্‌ থেকে তাওবা করার জন্য, ১১. মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ার পর নিজে গোসল করা।

গোসলের ফরয কয়টি ও কি কি?

আমাদের প্রত্যেকের গোসলের ফরয কয়টি ও কি কি তা জানা অত্যন্ত জরুরী। গোসলের ফরয তিনটি। গোসলের ফরযগুলো হলোঃ ১. গরগরাসহকারে ভালোভাবে কুলি করা, ২. নাকে পানি দেওয়া, ৩. সমস্ত শরীর একবার ভালোভাবে ধোয়া যেন শরীরের কোন জায়গা শুষ্ক না থাকে।

গোসলের সুন্নাত কি?

গোসলের ফরয জানার পাশাপাশি গোসলের সুন্নাত সম্পর্কেও জানতে হবে। গোসলের সুন্নাতগুলো হলোঃ ১. কব্জি পর্যন্ত উভয় হাত তিনবার করে ধোয়া, ২. নিজের লজ্জা স্থান ধৌত করা, ৩. শরীরের কোথাও নাপাকী লেগে থাকলে তা ধৌত করা, ৪. গোসলের পূর্বে পূর্ণ ওযূ করা, ৫. ওযূর সময় পানিতে পা ডুবানো থাকলে গোসলের পর তা ধৌত করা, ও ৬. সমস্ত শরীর তিনবার ধৌত করা।

গোসলের মুস্তাহাব কি?

এখন আমরা গোসলের মুস্তাহাব কি এ সম্পর্কে জানবো। গোসলের মুস্তাহাব গুলো হলোঃ ১. গোসলের নিয়্যত করা, ২. ক্বেবলামূখী হয়ে গোসল করা, ৩. পরিমিত পরিমাণ পানি ব্যবহার করা, ৪. শরীর ভালোভাবে ঘষে মেজে ধৌত করা, ৫. গোসলের পর শরীর ঢেকে ফেলা, ৬. তাড়াতাড়ি শরীর ঢেকে ফেলা।

গোসলের নিয়্যত কি?

আমরা অনেকেই গোসলের নিয়্যত জানি না। সবার সুবিধার্তে এখানে গোসলের নিয়্যত আরবী বানানসহ দেওয়া হলোঃ
نَوَيْتُ اَنْ اَغْتَسِلَ لِرَفْعِ الْجَنَابَةِ
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন আগতাসিলা লিরাফ'ইল জানাবাহ্‌।
অর্থঃ নাপাকী দূর করার নিমিত্তে আমি গোসলের নিয়্যত করলাম।

গোসলের নিয়ম কি?

সবশেষে আমাদের আলোচ্য বিষয় হলো গোসলের নিয়ম কি। আমরা অনেকেই গোসলের নিয়ম জানি না। কিন্তু গোসলের নিয়ম জানা প্রত্যেকের জন্য জরুরী। এখানে গোসলের নিয়ম আলোচনা করা হয়েছে।
সর্বপ্রথম গোসলের নিয়্যত করতে হবে। তারপর দু'হাত কব্জি পর্যন্ত তিনবার করে ধৌত করতে হবে। এরপর লজ্জাস্থান ধৌত করতে হবে। অতঃপর শরীরের কোথাও নাপাকী থাকলে তা ধুয়ে ফেলতে হবে। তারপর ওযু করতে হবে। তারপর ডান কাঁধে, বাম কাঁধে তিনবার করে পানি প্রবাহিত করতে হবে। অতঃপর মাথায় তিনবার পানি ঢেলে গোটা শরীর মালিশ করে ধৌত করতে হবে।

কুরআন শিক্ষা ও আরবী উচ্চারণ

মহান আল্লাহ তা'য়ালার মহাগ্রন্থ আল-কুরআন মাজীদকে সর্বস্তরের মুসলমান তথা স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি ও আধুনিক শিক্ষিত কর্মজীবি ও বয়স্ক ভাই বোনদেরকে প্রাথমিক ভাবে বিশুদ্ধ কুরআন শিক্ষা ও দৈনন্দিন আমলের প্রয়োজনীয় সূরা-ক্বিরাত, দু'য়া, হাদীস, মাসআলা-মাসাঈল অর্থসহ শিক্ষাদানের মাধ্যমে ইসলামী জীবন পরিচালনার ব্যবস্থা করে মহান আল্লাহ রব্বুল আ'লামীন এর সন্তুষ্টি অর্জন করা আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। কুরআন শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত পড়তে নিচের হলুদ বাটনে ক্লিক করুন।

কুরআন শিক্ষা ও আরবী উচ্চারণ সম্পর্কে বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের বিবরণ ও নিয়্যত

এখানে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের বিবরণ ও নিয়্যত দেওয়া হয়েছে।

ফজরের নামাযঃ ফজরের নামায চার রাক'আত। দুই রাক'আত সুন্নত এবং দুই রাক'আত ফরয।

যোহরের নামাযঃ যোহরের নামায ১২ রাক'আত। চার রাক'আত সুন্নাত, চার রাক'আত ফরয, দুই রাক'আত সুন্নাত ও দুই রাক'আত নফল।

আসরের নামাযঃ আসরের নামায আট রাক'আত। চার রাক'আত সুন্নাত ও চার রাক'আত ফরয।

মাগরিবের নামাযঃ মাগরিবের নামায সাত রাক'আত। তিন রাক'আত ফরয, দুই রাক'আত সুন্নাত এবং দুই রাক'আত নফল।

এশার নামায (বিতর সহ) এশার নামায ১৭ রাক'আত। চার রাক'আত সুন্নাত, চার রাক'আত ফরয, দুই রাক'আত সুন্নাত ও দুই রাক'আত নফল। তারপর তিন রাক'আত বিতর ও দুই রাক'আত শফিউল বিতর (নফল)।

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের বিবরণ ও নিয়্যত পড়তে এখানে ক্লিক করুন

নামাযের ওয়াক্তসমূহ কি কি?

আমরা এখানে জানবো নামাযের ওয়াক্তসমূহ কি কি। দৈনিক পাঁচবার নামায পড়া ফরয। এ নামাযের জন্য শরীয়তের নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত আছে। যথাঃ ১. ফজর, ২. যোহর, ৩. আসর, ৪. মাগরিব ও ৫. এশা।

নামাযের ওয়াক্তসমূহ কি কি? বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন

ওযূ কত প্রকার ও কি কি?

ওযূ কত প্রকার ও কি কি, ওযূর নিয়্যত কি, ওযূর দোয়া কি, ‍ওযূর ফরয কি, ওযূর সুন্নাত কি, ওযূর মোস্তাহাব কি, ওযূর মাকরূহ কি, ওযূ ভঙ্গের কারণ কি, ওযূর নিয়ম কি, ওযূ সম্পর্কীয় বিভিন্ন মাসায়েল পড়তে নিচের বাটনে ক্লিক করুন।

ওযূ কত প্রকার ও কি কি? এখানে পড়ুন

তায়াম্মুম কি? তায়াম্মুম এর বিবরণ

তায়াম্মুম কি, তায়াম্মুম এর বিবরণ, কি কি কারণে তায়াম্মুম করা যায়, তায়াম্মুম এর ফরয কি, তায়াম্মুম এর সুন্নাত কি, তায়াম্মুম এর নিয়ত কি, তায়াম্মুম করার নিয়ম কি, কি কি কারণে তায়াম্মুম ভঙ্গ হয় পড়তে নিচের বাটনে ক্লিক করুন।

তায়াম্মুম কি? তায়াম্মুম এর বিবরণ এখানে পড়ুন